দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হতে না হতেই নতুন করে উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এর অংশ হিসেবে রমজানে ইফতার মাহফিল ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে চলচে আলাপ-আলোচনা।
এখন পর্যন্ত সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে দুইজনের দেখা মিললেও পুরুষ-মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রায় ৭ জন প্রার্থীদের নিয়ে চলচে নানা জল্পনা-কল্পনা।
মাঠ জরীপে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে জনগনের ধারনা মতে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসাবে উঠে আসছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী’র নাম।
তিনি মাঠে-ময়দানে জোরালোভাবে প্রচারণা-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সভা,সেমিনার,ইফতার মাহফিলেও তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছেন।
আরো দেখা গেছে, রোজ-ঈদের সুযোগ নিয়ে গরিব-অসহায়দের পাশেও দাড়াচ্ছেন তিনি। বিভিন্নভাবে আর্থিক ও সামাজিকভাবে সাহায্য সহযোগীতার হাতও বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
অন্যদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর চৌধুরীও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ঢালাওভাবে ঘোষণা দিয়েছেন। তবে মাঠে-ময়দানে তাঁর প্রচারণা কম বলে ধারনা করছেন সাধারণ ভোটাররা। যদিও তিনি শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না সেটা নিয়েও সন্দেহ পোষণ করছেন।
এছাড়া চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা করার গুঞ্জন রয়েছে উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ চৌধুরী’র কথা। তাদের নিয়া সাধারণ মানুষের গুঞ্জন থাকলেও ব্যাক্তিগতভাবে তাঁরা এখন পর্যন্ত অন্যন্যদের মতো ঘোষণা বা কোন বার্তা দেন নি।
চেয়ারম্যান পদের চেয়ে বেশি আলোচনা সমালোচনায় রয়েছে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে। এইখানে নতুন চমক হিসাবে দেখা দিয়েছে সাংবাদিক রাসেল চৌধুরী ও গফুর মিয়া চৌধুরীকে। তারা দুজনই উখিয়ার সিনিয়র সাংবাদিক। তারা দুজনই মাঠে ময়দানে নির্বাচনী আমেজ নিয়ে এসেছেন বলে মন্তব্য করছেন সাধারণ ভোটাররা ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যন্য প্রচারণায় তাদের নাম সব চাইতে বেশি শুনা যাচ্ছে । হেভিওয়েট প্রার্থী হিসাবে তারা দুজনরই নাম উঠে আসছে সাধারণ জনগনের মাঝে।
যদিও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টু চৌধুরী ও এ পদের জন্য লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তারা এখনো প্রচার-প্রচারনায় অন্যন্যদের তুলনা পিছিয়ে রয়েছেন বলে ধারনা করছেন ভোটাররা।
এছাড়া গুঞ্জন রয়েছে জামায়েত ইসলামীর মাওলানা আমীর আবুল ফজলও এ পদে প্রার্থীতা করবেন। তবে তিনি এখন পর্যন্ত কোন নিজস্ব বার্তা দেননি।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম উঠে আসছে, উখিয়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুনেচ্ছা বেবি, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিন আক্তার তারা দুই প্রার্থীর মধ্যেও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ঢালাওভাবে চলছে। সাধারণ ভোটারদের মতে তারা দুজনই হেভিওয়েট প্রার্থী।
এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রর্থীতা করার গুঞ্জন রয়েছে জালিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন ও মরিচ্যার সানজিদা আক্তার মায়ার নাম। এদের গুঞ্জন থাকলেও মাঠে ময়দানে বা প্রচার-প্রচারণায় তারা এখনো নিরব। তারা কোন ঘোষনা বা নিজস্ব কোন বার্তাও দেন নি।
এসব নির্বাচনী কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রাজনীতির ম্যার-প্যাঁচ, ভোট ব্যাংক, প্রার্থীর ইমেজ ও অতীত কর্মকাণ্ড। পাশাপাশি রয়েছে উখিয়া-টেকনাফের ভোটের ম্যাজিকম্যান ও দানবীর খ্যাত সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির সমর্থিত বা মনোনীত প্রার্থী কে হচ্ছেন সেটাও রয়েছে ভোটারদের মুখে মুখে।
অতীত নির্বাচনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি যে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন সেই প্রার্থীই শেষ পর্যন্ত বিজয়ের মালা পড়েছেন। সেই অনুপাতে নির্বাচনে প্রধান কেন্দ্রবিন্দু বদি বলেই মন্তব্য করছেন সাধারণ ভোটাররা।
উল্লেখ্য, আগামী ৮ মে থেকে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন