★ দখল নিতে ব্যবহার করেছেন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী
★ জমির প্লটের গাছপালা লুঠপাট
★ জড়িত রয়েছে গ্রাম পুলিশও
ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকার পতন হওয়ার পর থেকে চারদিকে দেখা যাচ্ছে চাদাঁবাজি,দখলবাজি,বিভিন্ন প্রতারণাপুর্বক টাকা আত্মসাত করার ঘটনা। সারাদেশে এমন অদ্ভুত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে মাঠে কঠোর অবস্থান নিলেও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু দুষ্কৃতকারী চাদাঁবাজ ও দখলবাজের চক্র নিরবে এসব অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু এলাকায় সরকার কর্তৃক লীজ প্রাপ্ত মালিকানাধীন প্লটের ২৫ একর জায়গা জবর দখল করে নিয়েছেন একটি দখলবাজ চক্র ।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা পুরানো রোহিঙ্গাসহ স্থানীয় কিছু দখলবাজ চক্র যোগসাজশে অন্যের মালিকানা সরকারি লীজের ২৫ একর প্লট জবরদখল করে ঘেরাবেড়া দিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন ।
স্থানীয়রা বলছে, এই প্লটের প্রকৃত মালিক ঢাকায় বসবাস করেন। তাদের দুরবর্তী অবস্থানের সুযোগ নিয়ে ঘুমধুম ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের তুমব্রু পশ্চিমকুল পাহাড় পাড়ার বাসিন্দা আবদূর রহিমের ছেলে জমির হোছন,নবী হোছন ও মৃত আবদুল মজিদের ছেলে, ১নং ওয়ার্ডের চৌকিদার মো: শরীফ, ২নং ওয়ার্ডের চৌকিদার আবদুল মালেকের জামাতা বহিরাগত আব্দুল মোনাফ ও তার স্ত্রী সফুরা খাতুন এবং বার্মাইয়া হোছন সহ ৮/১০ জন দখলবাজ বিনা কারণে এই সরকারি লীজের জায়গাটি দখলে নিয়ে গাছাপালা লুঠপাট করে ঘেরাবেড়া দিয়েছেন।
তারা শুধু দখলবাজ নই সীমান্তের বড় বড় ইয়াবা ও চোরাইচালানের গডফাদারও বটে। এই দখলবাজের মূল হোতা একরাম বিপুল পরিমান ইয়াবা নিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। দীর্ঘ কয়েক বছর জেল খেটে সদ্য জামিনে বেরিয়ে এসে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে লিপ্ত হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না অন্যের জমি দখল করাও। তার রয়েছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাস বাহিনী। তাকে মদদ দিচ্ছে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ শরীফ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই ২৫ একর প্লটের সরকারি লীজের চুক্তিনামা অনুযায়ী প্রাপ্তসুত্র মালিক ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের উত্তর কমলাপুরের কাজী জসিম উদ্দিন রোডের ৬৩/৪ নং হোল্ডিংয়ের বাসিন্দা এবিএম সাইফুল্লা চৌধুরীর কন্যা ডা: সুলতানা শামীমা চৌধুরী।
উক্ত জায়াগার তার মালিকানাধীন কাগজমূলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ২৭১ নং তুমব্রু মৌজার ১১ নং সীটের ২০১২ নং দাগের ১৮.২৭ একর এবং ২০১৪ নং দাগের ৬.৭৩ একর সহ মোট ২৫ একর ৩য় শ্রেণীর জমি সরকার কর্তৃক লীজ প্রাপ্ত হয়েছিলেন তিনি।
যেটি ১৯৯৯/২০০০ অর্থসালে উক্ত জায়গা লীজপ্রাপ্ত হয়ে দখল সংরক্ষণে আছেন এবং বাগান সৃজন করেছিলেন ডা: সুলতানা শামীমা চৌধুরী। বর্তমানে বাগানের সব গাছ লুঠপাট করে উপরোক্ত চকবন্দে প্লটটি দখলবাজদের চক্রের নিয়ন্ত্রণে নেন।
ওই বাগানের তত্বাবধায়ক স্থানীয় বাসিন্দা ছৈয়দুল বশর জানান, সরকারি জায়গা যে লীজ নেই তার ভোগ দখলেই থাকে । ওই জায়গার আশপাশে গত কয়েক বছরে অনেকেই সরকারিভাবে জায়গার লীজ নিয়েছে। কারো লীজের জায়গা কেউ দখলবাজি করে নাই।
হঠাৎ করে ড: সুলতানা শামীমা চৌধুরীর মালিকানাধীন লীজের ২৫ একর জায়গাটি দখলবাজরা নিয়ন্ত্রণে নিতে ঘেরাবেড়া দিয়ে রেখেছেন।
দখল কাজে রাজনৈতিক দলের কোন নেতাকর্মী জড়িত কিনা প্রশ্নোত্তরে বলেন, কোন রাজনৈতিক নেতা বা অন্যন্য দলের কেউই ছিল না। আশা করি কারো ইন্ধন ও নেই। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এসব কাজ করেছে।
দখলের খবর শুনে কিছু স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে যান, তারা দখলবাজদের নিষেধ করেছেন দখলবাজি না করতে। তারা দখলবাজদের কাছে কোন দালিলিক প্রমাণপত্র আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে কিছুই নেই বলে সাফ জবাব দেন।
একটি অসমর্থিত সুত্র বলছে , ৫আগষ্টে দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পট পরিবর্তের পর একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় কতিপয় কয়েক নেতার ইশারা-ইংগিতে এমন দখল কর্মকান্ড চালাচ্ছে তারা। তবে কেউ সামনে শো দিচ্ছে না। তাদের ব্যবহার করে মূলহোতারা গা ডাকা দিয়েছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট হ্যাডমেন অবগত আছে কি না জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও সংযোগ মিলেনি।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মাসরুরুল হক এ প্রসঙ্গে জানান, এ ধরণের কোন খবর এখন পর্যন্ত পাই নাই। কেউ লিখিত অভিযোগও দেয় নাই।অভিযোগ দিলে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।