টাকা পেলে সব সব জায়েজ না পেলে মামলা এভাবেই চলছে উখিয়া রেঞ্জের হলদিয়া বিট কর্মকর্তা ইসমাইলের কর্মকান্ড।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ আলোচিত ও বিতর্ক কর্মকান্ড নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন হলদিয়ার এই বিট অফিসার।
চলতি বছরের জুন মাস থেকে হলদিয়া বিটে ইসমাইল হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বনভুমি দখল,দালান নির্মাণ,পাহাড় কেটে মাটি পাচার,পানের বরজ,বনের গাছ কেটে পাচারসহ অসংখ্য বন আইন বিরোধী কার্যক্রম বেড়ে গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাতিরঘোনা এলাকায় শাহাব উদ্দিন বনের গাছ কেটে দিন দুপুরে কাট পাচার করতেছে। খবরটি দিতে বিট কর্মকর্তা ইসমাইলকে অবগত করা হলে গাছ কাটছে এরকম এক শ্রমিক বলছে বিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই মালিক গাছ কাটতেছে। বিট কর্মকর্তা গাছ আটক করবে না।
এ পরিদর্শনে আরো দেখা যায়, পশ্চিম বড়বিল এলাকায় উলা মিয়া ফকিরের ছেলে হোসেন শরিফ বনের জায়গায় দালান নির্মাণ কাজ চালাচ্ছে। পাশে আরো ২/৩ টি দালান নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ক্লাসোপাড়া এসে দেখা যায় পাহাড় কাটার দৃশ্য।
স্থানীয়রা বলছে, সব কাজ হলদিয়ার বিট কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনকে ম্যানেজ করেই সব কাজ চলছে। নিয়মিত গাছ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসোহারা নিচ্ছে। এই অফিসার নিজের বিট সামলাইতে পারে না অথচ পাগলির বিল বিটে এসে মামলার হুমকি দিয়ে চলে যায় মানুষকে। তার স্বেচ্ছারিতা ও বন আইন বিরোধী কার্যকলাপে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে এই অফিসার।
হাতিরঘোনা এলাকার হাজ্বি জাফর আলমের প্রতিবন্ধী ছেলে সিদ্দিক আহমেদ তার জীবিকা নির্বাহে তাদের পুর্বে দখলীয় বনের জায়গায় পানের বরজ করতে গেলে বিটকর্মকর্তা ইসমাইল আইনিভাবে বাধা প্রদান করেন। পরে তার এক নিকট আত্মীয়র মাধ্যমে খবর দেন ৩০ হাজার টাকা দিলে পানের বরজ করা যাবে এতে তারা নিরুপায় হয়ে ধার-দেনায় ১৪ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেন বিট কর্মকর্তাকে। পানের বরজ নির্মাণ শেষে অবশিষ্ট ১৬ হাজার টাকা না দেওয়াতে তাদের পারিবারিক বিরোধীয় একটি পক্ষ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে প্রতিবন্ধীর করা পানের বরজের দায়ে তার পিতা হাজ্বি জাফরের নামে বন আইনে মামলা দেন বিট কর্মকর্তা ইসমাইল।
হাজ্বি জাফর আলম জানিয়েছেন, আমার দীর্ঘদিনের ভোগ দখলীয় সামাজিক বনায়ণের জায়গায় আমার ছেলে প্রতিবন্ধী সিদ্দিক তার আই রোজগারের জন্য পানের বরজ দিয়ে যদি আমাকে মামলা খেতে হয় এর থেকে সুখের কিছু হতে পারে না। কারণ আমার আশেপাশে অনেক বড় বড় ক্ষমতাধর ব্যক্তি বনের জায়গায় দালান নির্মাণ করেছে। বনের গাছ কেটে মরুভূমিতে পরিনত করেছে। পাহাড় কেটে মাটি পাচার করেছে,পানের বরজ তো প্রতিটি ঘরেই দিয়েছে কই কারো জন্য তো মামলা হয়নি। যারা গরিব,অসহায় টাকা দিতে পারে না হাতেগোনা তারা কয়েকজনের জন্যই মামলা হয়। আমি বিভাগীয় বন কর্মকার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই উনারা আমার এলাকায় এসে ঘুরে দেখুক এইখানে বনের জায়গার বর্তমান অবস্থা। কিভাবে বিট কর্মকর্তারা লুটপাট করে গেছে।
এসব বিষয় নিয়ে হলদিয়ার বিট কর্মকর্তা ইসমাইলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি টাকা নি না। আপনি যা বলতেছেন এগুলা আগের ঘটনা।
আপনার আমলে নতুন কি কি কাজ হয়েছে এবং কি কি অপরাধে কইজন কে মামলা দিয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বিটকর্মকর্তা বলেন, আমার আমলে কি কাজ হয়েছে আপনাকে কেন বলব আর কি অপরাধে কইজন কে মামলা দিয়েছি এসব আপনাকে বলতে আমি বাধ্য নই।
উখিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার গাজী শফিউল আলম জানান, হলদিয়া বিট অফিসার তথ্য দেওয়ার বিষয়টা হয়তো না বুঝে বলছেন। তবে আপনি আমাকে স্পেসিফিক তথ্য দেন আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এদিকে কক্সবাজার দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলছেন, কোন বিট অফিসার, বন কর্মী অপরাধ করলে সেটি প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইসমাইলের অপরাধের তথ্য দিন তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।