উখিয়া উপজেলার ৪নং রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে জেলা নির্বাচন অফিস।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন নির্বাচনের জন্য তাকে অযোগ্য ঘোষণা করেন।
এর আগে, অপর চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাদমান জামি চৌধুরী মনোনয়নপত্র অবৈধ দাবি করে অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরীর বিরুদ্ধে জেলা নির্বাচন অফিসে আপিল করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা, উভয়পক্ষের আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের উপস্থিতিতে এবং দীর্ঘ যুক্তিতর্ক শেষে মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা নির্বাচন অফিস।
জানা গেছে, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পরপরই প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে আপিল করতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী।
এ বিষয়ে জানতে তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে হলে তিনি বলেন, মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি মহামান্য হাইকোর্টে আইনি লড়াই করবেন।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাদমান জামি চৌধুরী বলেন, ছলচাতুরী করে অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন এবং সেটির বৈধতা দেয় উপজেলা নির্বাচন অফিস।
তিনি বলেন, আমাদের দালিলিক ও লিখিত অভিযোগ কর্ণপাত না করে যাচাই-বাছাইয়ের সময় হুমায়ুন কবির চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বৈধতা ঘোষণা দেন উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সাদমান জামি চৌধুরীর অভিযোগ, অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী একজন সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা চাকরিজীবী এবং সেখান থেকে নিয়মিত বেতন গ্রহণ করেন। তিনি তার পদ থেকে চূড়ান্তভাবে পদত্যাগ না করে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এর প্রেক্ষিতে পরে জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে আপিল করলে আজ (মঙ্গলবার) শোনানির দিনে অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় এবং সরকারি চাকরির বৈধ পদত্যাগপত্র দেখাতে না পারায় তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের পূর্বে জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে পদত্যাগপত্র জমা দেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী।
অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী উখিয়ার আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার বোন শাহিন আক্তার বর্তমান উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য ও তার ভাই জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
অপরদিকে, সাদমান জামি চৌধুরী বিএনপি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার পিতা শাহ কামাল চৌধুরী দীর্ঘদিন রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
উখিয়ার দুই রাজনৈতিক পরিবারের এ ভোট ও স্নায়ুযুদ্ধে দুই পক্ষের সমর্থকের মাঝে টানটান উত্তেজনা ও চরম উৎসাহ বিরাজ করছে।
গেল ২৯ মে ষষ্ঠ উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। এর পরেই চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হয়ে পড়লে গত ২৭ জুন সেখানে উপনির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১০ জুলাই; প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১১ জুলাই ও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৭ জুলাই। এর আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল হয় ৬ থেকে ৮ জুলাই; আপিল নিষ্পত্তি হয় ৯ জুলাই; মনোনয়নপত্র জমা হয় ৪ জুলাই ও যাচাই-বাছাই হয় ৫ জুলাই।
মনোনয়নপত্র জমা দেন অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী, ফরিদুল আলম (কন্ট্রাক্টর), সাদমান জামি চৌধুরী, মকবুল হোসাইন মিথুন ও আব্দুল মালেক চৌধুরী।
এবার ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দ্বারা।