নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আসা চোরাই গরু বৈধ করতে প্রত্যয়ন দিচ্ছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
এমন এক দৃশ্য দেখা গেছে ঘুমধুম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে। মায়ানমার থেকে চোরাই পথে আসা গরুর প্রত্যয়ন দিয়ে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ- সভাপতি দিল মোহাম্মদ ।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ মায়ানমার থেকে চোরাই গরু এনে বৈধ করতে নিয়মিত প্রত্যয়ন দিতো। সীমান্তে চোরাই গরু সিন্ডিকেটদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে অদৃশ্য থেকে সকল কারবার সম্পন্ন করতেন তিনি। সীমান্তের সকল চোরা কারবারির নিয়ন্ত্রক হিসাবে মাস্টারমাইন্ডের ভুমিকা রেখে আড়ালে সীমান্তের অবৈধ কারবার তিনি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করে লাখ লাখ টাকার মালিক হয়।প্রশাসনিক জটিলতা ও আইনি বাধা বিপত্তি সকল কর্মকান্ড তিনি ম্যানেজ করে কারবারিদের ব্যবসার সুযোগ করে দিতেন। কিন্তু এই ব্যবসার মূল নায়ক ছিলেন ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ। তিনি অন্যের সুপারিশের নামে নিজের ব্যবসার সমস্যা সামাধান করতেই ইউনিয়ন পরিষদের প্যাড ব্যবহার করে প্রত্যয়ন দিতেন।
আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে তারা সিন্ডিকেট করে প্রকাশ্যে চোরাই কারবারে জড়িত থাকলেও বর্তমানে প্রকাশ্যে না এসে জনপ্রতিনিধির ক্ষমতা কাটিয়ে এসব কাজ চালাচ্ছে ।
স্থানীয়রা বলছে, তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে গরু,মাদক, স্বর্ণ ইত্যাদি মায়ানমার থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে আসে। এসবের লাইন ম্যানেজ করতে দিল মোহাম্মদ মেম্বার ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে লিখিত আকারে সুপারিশ করতেন। তার সুপারিশের মূল্য ছিল প্রতি গরু থেকে ১০০০-১৫০০/ টাকা। একজন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হিসাবে এসব দেশদ্রোহী কাজে ইউনিয়ন পরিষদের প্যাড ব্যবহার করে সুপারিশ করা জনগণের জন্য কখনোই শুভকর হতে পারে না।
এসব ঘটনার বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি দু একটা প্রত্যয়ন দিলে এত অপরাধ, অন্যদিকে সকলেই তো এসব প্যাড দিয়ে চোরাই গরু বৈধ করতেছে। শফিক মেম্বার তারা প্রতিদিন এরকম প্রত্যেয়ন দেয়। আমি মাঝে মধ্যে দিয়েছি। তাও এগুলা পালিত গরু। চোরাই গরুর প্রত্যয়ন আমি দি নাই।
ইউপি সদস্য কর্তৃক চোরাই গরুর প্রত্যয়ন দেওয়ার বিধান আছে কি না জানতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো: মাজহারুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জবাব দেন এরকম কোন এখতিয়ার জনপ্রতিনিধির নেই। এসময় তিনি প্রতিবেদককে বলেন, চোরাই গরুর বিষয়গুলি সীমান্তে বিজিবিরা দেখাশোনা করেন, তবে কোন জনপ্রতিনিধি যদি চোরাই গরুর প্রত্যয়ন দিয়ে থাকে প্রমাণসহকারে আমাকে পাঠান তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।