সম্প্রতি কক্সবাজার জেলায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আগমনে অতিথি পরায়ণ অনুষ্ঠানে এডভোকেট ফরিদুল আলম ( পিপি) বসার জায়গা না পেয়ে ছবি তুলে রীতিমতো ভাইরাল হয়েছেন। এ বিষয়ে নিয়ে দৈনিক ইত্তেফাক ও জাগো নিউজের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক সায়ীদ আলমগীর তার নিজস্ব ফেইসবুক প্রোফাইলে ছাত্রলীগ নিয়ে যে আবেগগন স্টাটাসটি দিয়েছেন সেখানে যা বলেছেন হুবহু নিম্নে তুলে ধরা হলো। দেখুন এক নজরে….
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ…..
ছবির লাল গোল চিহ্নিত সম্মানীয় এ ব্যক্তিকে কক্সবাজারে সকল রাজনৈতিক দলের মাঠের নেতাকর্মীগণ চিনেন না, এমন পোড়খাওয়া লোক নেহায়েত কম আছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর হতে যারা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও অন্য সহযোগী সংগঠনের নেতা বা কর্মী হয়ে মুজিবকোটকে দিন ব্যতিরেখে রাতের বিছানার সঙ্গীও বানিয়েছেন তারাই কেবল এ ব্যক্তিকে চিনেন না- দেশের সংকট ও সংগ্রামের নেতৃত্বের মূল চালিকাশক্তি ছাত্রলীগের জন্য তাঁর ত্যাগ সম্পর্কে কোন ধারণা এসব নেতাকর্মীদের নেই।
ইনি কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের বর্তমান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ওরফে ফরিদ বদ্দা বা মিড়া ফরিদ।
চরম দুঃসময়ে অকুতোভয় মুজিব সৈনিক হিসেবে তিনি কক্সবাজার ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেই মানুষটি হয়তো ছাত্রলীগের ভালোবাসা ও দূর্বলতার টানে বিনা দাওয়াতে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে বৃদ্ধ বয়সে তারুণ্যের মন নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু ভাইয়ের রাজনীতি বা সহমত পোষণে নেতা-কর্মী হওয়ায় ফরিদ বদ্দাকে অর্বাচিন ভেবে নিজের চেয়ারটি ছেড়ে দিতে পারেনি তার সামনে বসে থাকা অসংখ্য তরুণ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
আমিও ছাত্রলীগের অসময়ের কর্মী হিসেবে ছবিটি হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করায় দু’কলম না লিখে থাকতে পারিনি।
আগের দিনে মাঠে-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজের রাজনৈতিক শিষ্টাচার দিয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারলেই কেবল নেতা ও কর্মীদের আপন হয়ে পরবর্তী কান্ডারী হবার সুযোগ হতো। সেই হিসেবে- ওনাকে না চিনলেও, বৃদ্ধ হিসেবে হলেও চেয়ার ছেড়ে দিয়ে কোন ছাত্রলীগের কর্মী পারিবারিক শিষ্টাচারের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারতেন-
কিন্তু ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার মসনদ পাবার পর মূলদলসহ ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠন সবটাতেই ভাইয়ের মানুষ, সহমতের মানুষ, টাকার ফানুস জায়গা মতো দিতে পারলে, অতিশয় গরমেও গায়ে মুজিবীয় কোট পরে প্রদর্শন করতে পারলে পদ-পদবী মিলছে। আবার কেন্দ্রের অনেক নেতার বাসার বাজার করা ছেলেটা, মনোরঞ্জনের খোরাক জোগাড়কারি বা এলাকা ভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনা করা ব্যক্তিও অকল্পনীয় ভাবে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পদের মালিক হচ্ছে- ফলে, স্ট্যাজের এ দৃশ্যের অবতারণা হচ্ছে…
রাজনৈতিক শিষ্টাচার জানা না থাকলে সেই নেতা-কর্মীর কাছ থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি ছাড়া আর কিছুই আশা করা ‘গুড়ে বালি’।
তাই চলমান ছাত্রলীগের কাছ থেকে ‘ভাই লীগ’ ছাড়া কল্যাণময়ী ভালো কিছু আগামী প্রজন্ম শিক্ষা পাবে না- তা নি:সন্দেহ অনুমান করা যায়….