পাহাড়ি অঞ্চলের শীর্ষ ডাকাত খ্যাত’ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে মামলার আসামী সৈয়দ হামজা জনপ্রতিনিধি’র কাতারে এসে ইউনিয়ন পরিষদে চালাচ্ছে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও উর্ধতন মহল থেকে তদন্তের কোন প্রক্রিয়া দেখা যায়নি।
জানা গেছে, সৈয়দ হামজা উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। সে জনপ্রতিনিধি’কে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব চালাচ্ছে। বিগত সময়ে তার অপরাধের দায়ে তাকে বিভিন্ন ধারায় মামলা টুকিয়ে দেয় প্রশাসন।
গনঅভ্যুত্থানের পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ডিলেডালা হওয়াতে পুর্বের কাজ পুনরায় শুরু করেন তিনি। স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব অপকর্ম চালিয়ে বেড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন একাধিক মানুষ।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে বনের পাহাড় কাটা,বনভুমি জবরদখল করে বেচা-বিক্রি করা,বন বিরোধী বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমের দায়ে ২০১৬ সালে তাকে প্রধান আসামী করে মামলা করেন বন-বিভাগ। যার মামলা নং উখিয়া-১০২। সেই মামলা খাওয়ার পরেও থেমে থাকে নি তার অপরাধ। চালিয়েছে একেরপর এক সরকার বিরোধী কার্যকলাপ।
সর্বশেষ গত মাসে তার আপন ভাইকে দিয়া সংরক্ষিত বনের কাছ কেটে পাচার করার সময় গাছসহ ড্রাম্প ট্রাক জব্দ করেন বিজিবি। পরে বিজিবি ওই গাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জে হস্তান্তর করেন । বিভিন্ন অপকৌশল ব্যবহার করে সেই গাড়ির সাথে তার নাম বাদ দিয়ে ভাইয়ের নাম শো করে বেঁচে যান তিনি। পরবর্তী গাড়ির বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দেন বন-কর্মকর্তারা। এখনো সেই গাড়ি জব্দ রয়েছে।
এছাড়াও পাহাড়ে ডাকাতি ও অস্ত্র দিয়ে মহড়ার সময় প্রশাসন তাকে হাতে নাতে আটক করেন। যার মামলা পিসিপিআরে রেকর্ড রয়েছে।
কক্সবাজার সদর থানায় নারী ও শিশু ধর্ষণ অপরাধেও রয়েছে তার নামে মামলা।
বন অপরাধ, অস্ত্রধারী ডাকাতি,নারী কেলোঙ্গরীসহ বহু অপকর্মের হুতা সৈয়দ হামজা তথ্য লুকিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জনপ্রতিনিধি’ পরিচয়ে।
টাকার জোরে জনপ্রতিনিধি’র পরিচয় বহন করলেও ছন্দ্মবেশে চালাচ্ছে তার পুরোনো পেশার কাজ। প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে বেরিয়ে আসবে তার সকল অপকর্ম।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে চাল কেলেঙ্গারীর অভিযোগে অসংখ্য ফেইসবুক ইউজারকারীরা ঢালাও ভাবে স্ট্যাটাস দিয়েছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদসহ পুরো উখিয়া এখনো সরগরম রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে সৈয়দ হামজার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা ছাড়া কোন মামলা নেই। বন এবং অস্ত্র এধরনের কোন মামলা নেই।
রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর শাহেদুল ইসলাম রোমান বলেন, এসব ঘটনা আসতেছে মূলত ছোট একটি বিষয় থেকে। মেম্বার হয়তো সাংবাদিকদের বুঝাতে অক্ষম হয়েছে যে সে কোন দুষ করেনি সেটা। তবে, চাল কেলাঙ্গারির বিষয়টি হলো গ্রাহকরা কার্ড নিয়ে অনেক সময় তারা চাল না নিয়ে ব্যবসায়ীদের বিক্রি করে দেয় অল্প টাকায়। সেখানে একটি মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে। মেম্বার চাইলে সেগুলা সাংবাদিকদের বুঝিয়ে দিতে পারতো। তাইলে এত বড় ইস্যু সৃষ্টি হতো না।
লিখিত অভিযোগ বা মামলায় ওয়ারেন্ট থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানান উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফ হোসেন।