সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
উখিয়ার ঘাটে রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর তাণ্ডব: পারিবারিক বিরোধের জেরে রক্তাক্ত সংঘর্ষ যেকোনো সময় সচল করা হতে পারে আ.লীগের কার্যক্রম: ড. ইউনূস মাদক ছিনতাই থেকে পাচার—সবখানেই সক্রিয় পালংখালীর মঞ্জুর আলম তাঁতীলীগ নেতাকে ছেড়ে দিয়ে সংবাদকর্মীকে গ্রেফতার করলেন উখিয়ার ওসি! কক্সবাজারে শিক্ষিকা ধর্ষণ মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন জাতিসংঘে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস অভিযোগ, বর্জন, বিক্ষোভের ভোট, ফলের অপেক্ষা কুতুপালং বাজার ব্যবসায়ী সমিতি নির্বাচন ঘিরে আলোচনায় মোহাম্মদ ইমরান উচ্ছেদ কার্যক্রমে বাধা: ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ ১ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

উখিয়ায় ইয়াবা উদ্ধার হলেও আটক হচ্ছে না গডফাদার,বেপরোয়া কারবারি’রা

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩১৯ বার
আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫
ফরিদ

কক্সবাজারের উখিয়ায় পরিত্যাক্ত ও মালিকবিহীন ইয়াবা উদ্ধারের নতুন হিড়িক চলছে। ইয়াবার বড় বড় চালানের সন্ধান পেলেও প্রকৃত মালিকের সন্ধান পাচ্ছে না প্রশাসন। গত কয়েকমাসে অধিকাংশ মাদক বিরোধী অভিযানে ইয়াবা উদ্ধার করলেও পাচারকারী বা ইয়াবার প্রকৃত মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অনেক সময় পাচারকারী আটক হলেও গডফাদার’রা ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যায়। প্রশাসনের জিজ্ঞসাবাদে পাচারকারী’রা স্বীকার করে না আসল অপরাধীর নাম।

পাচারকারীদের ট্রেনিং সহকারে শিক্ষা দেওয়া হয় আসল মূল মালিকের নাম যেন মুখে না আনে। উখিয়া-টেকনাফে এভাবেই গডফাদার’রা ধরাঁছোয়ার বাহিরে থেকে রোহিঙ্গা পাচারকারীদের মাধ্যমে সুকৌশলে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কারবারি’রা।

সম্প্রতি বিজিবি দেওয়া তথ্যমতে, গেল ৮ই মার্চ শনিবারে ৩৪ বিজিবি মাদক বিরোধী অভিযানে বালুখালী থেকে মালিকবিহীন পঞ্চাশ হাজার পিছ ইয়াবা উদ্ধার করতে সাক্ষম হয়। বিজিবির অনেক কলা-কৌশল কাটিয়েও প্রকৃত মালিকের তথ্য বের করতে সম্ভব হয়নি।

এর আগে ২৬শে এ ফ্রেব্রুয়ারী একই কায়দায় বালুখালী থেকে মালিকবিহীন দশ হাজার পিছ ইয়াবা উদ্ধার করেন ৩৪ বিজিবির সদস্যরা। সেখানেও পাচারকারী কৌশলে পালিয়ে যায়। ফলে পাচারকারী ও প্রকৃত মালিক ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যায়।

২০ শে ফ্রেব্রুয়ারীও বালুখালী বিওপির অভিযানে মালিকবিহীন আসামী ছাড়াই বিশ হাজার পিছ ইয়াবা উদ্ধার করেন ৩৪ বিজিবির সদস্যরা। সেখানেও ইয়াবার কোন মালিকের তথ্য বের করা সম্ভব হয়নি। ফলে কারবারিরা অনায়সে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এরকম বহু অভিযানে মাদকের বড় চালান উদ্ধার হলেও প্রকৃত অপরাধী ও গডফাদার’রা ধরাছোঁয়ার বাহিরেই থেকেই যাচ্ছে। ফলে মাদক ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় সচেতনমহল।

এসব ঘটনা বেশিরভাগই বালুখালী এলাকা কেন্দ্রীক ঘটতেছে। এসব বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে এসেছে ইয়াবার মাফিয়া খ্যাত বর্মায়া নবী হোসেনের সহযোগী বালুখালী এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা কারবারী ফরিদ প্রকাশ চিয়ক ফরিদের সাথে এসব ইয়াবার সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে লোকেমুখে গুঞ্জন ছড়িয়েছে ।

প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদকের গডফাদার’ ফরিদ এভাবেই দিনের পর দিন রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে দেদারসে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

অনুসন্ধানে আরো উঠে এসেছে, ফরিদ একাধিক মাদক ও চোরাচালান মামলার আসামী। সেই সুবাধে ফরিদ মামলার ভয়ের পাস কাটিয়ে তিনি এপার-ওপারে বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি করে বালুখালী কেন্দ্রীক ইয়াবার সম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন।

বিভিন কৌশলে রোহিঙ্গা পাচারকারীদের ব্যবহার করে ফরিদ দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে ইয়াবা পৌঁছে দিচ্ছে। ইয়াবা পাচারকারীদের ট্রেনিং আকারে শিক্ষাও দেওয়া হয় কোনভাবেই যাতে ফরিদের নাম না আসে ইয়াবা ধরা পড়লে। এরকম বিভিন্ন কলা-কৌশল ব্যবহার করে ফরিদ ইয়াবার রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

সুনির্দিষ্ট প্রুফ না থাকলেও বালুখালী কেন্দ্রীক যতসব ইয়াবা উদ্ধার হচ্ছে সব কিছুর মালিক ফরিদ বলেও লোকেমুখে শুনা যায়। প্রশাসন বলছে দৃশ্যমান প্রুফ না থাকায় তাকে আটক করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা গেছে, তার একাধিক মাদক মামলা ও চোরাচালান মামলা চলমান রয়েছে। গেল ১৭ ফ্রেব্রুয়ারীতেও উখিয়া থানার অভিযানে ফরিদের মালামালসহ চোরাচালানের গাড়ি জব্দ করেন পুলিশ। এ নিয়ে মামলাও দায়ের হয় উখিয়া থানায়। যার মামলা নং ২৬ (১৭/২/২৫ইং)। ইতিপূর্বেও তাকে র‍্যাব, পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত একাধিক সংস্থা তাকে আটকও করেছিলো। তার বিরুদ্ধে রয়েছে জিআর- ৩৯০/২০২২ইং (উখিয়া), জিআর- ২৮৪/২০১৬ইং (কক্সবাজার সদর), জিআর- ১০২০/২০২২ইং (টেকনাফ)সহ একাধিক মাদক মামলা থেকে শুরু করে হত্যা চেষ্টা, মারামারিসহ ডজন খানেক মামলা।

তার মেজু ভাই ইয়াবার গডফাদার চিহ্নিত জাফর আলম দীর্ঘ কয়েক বছর আগে র‍্যাবের বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হন। এর পর থেকেই ফরিদ তার ভাইয়ের হাল ধরেছে বলেও এলাকাবাসী জানান।

ফরিদ অনেকবার মাদক নিয়ে কারাভোগ করেছে। এসবে তার কিছুই হয় না। বের হলেই জড়িয়ে পড়েন এসব মাদক ব্যবসায়।

স্থানীয়রা জানান, বিগত সরকারের আমলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আরেক মাদক কারবারি ফজল কাদের চৌধুরী ভুট্টোর বড় ভাই গোলাম কাদেরর সাথে বাজারের ইজারাকে পুঁজি করে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যেতো।

পট পরিবর্তন হওয়াই নিজেকে সেইভজোনে রাখতে বর্তমানে বিএনপি’র রাজনীতি করার জন্য সাবেক যুবদল নেতা সরোয়ার সিকদারকে লাখ লাখ টাকা ডোনেশন দিয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে গিয়ে বিএনপি’র নেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফ হোসেন জানিয়েছেন, মাদক কারবারি যতবড় নেতা হউক না কেন,যতবড় প্রভাবশালী হউক না কেন,সে কারবারি হিসাবেই চিহ্নিত থাকবে।  মাদকের সাথে যাকে সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাকেই আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

কক্সবাজার (৩৪)  বিজিবির অধিনায়ক লে কর্ণেল মোঃ ফারুখ হোসেন খান বলেন, বিজিবির সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে শুধুমাত্র ইয়াবার গডফাদার’দের আটক করার জন্য। কিন্তু তারা এমন ভাবে ইয়াবা পাচার করতেছে যে পাচারকারী সেই নিজেও আসল মালিক কে চিনে না। এর মধ্যে অধিকাংশ পাচারকারী রোহিঙ্গা। তারপরও ব্যাটালিয়নের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে প্রুফ সহকারে মাফিয়াদের আটক করার জন্য। একদিন না একদিন ধরা পড়বেই।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর