এম ফেরদৌস ( উখিয়া কক্সবাজার)::
কক্সবাজারের উখিয়ায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে একদল অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। দিনের আলো নিভে গেলেই দুষ্কৃতকারী রোহিঙ্গারা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়।
জানা যায়,রোহিঙ্গা শিবিরগুলোকে একচ্ছত্র আধিপত্য নেওয়ার চেষ্টায় ভিন্নমত নিশ্চিহ্নের মিশনে নেমেছে তারা। এ শিবিরে রোহিঙ্গাদের গ্রুপিংয়ের কারণে তারা এক ক্যাম্প হতে অন্য ক্যাম্পে হামলা চালানোর উদ্যোশ্যে রাতের আধারে মহড়ায় নামেন। তাদের অস্ত্রের যোগানদাতা হিসাবে রয়েছে অস্ত্রপাচারের বিশাল সিন্ডিকেট।
গত ২৮ মে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র সরবরাহ কালে দেশীয় তৈরি একটি ওয়ানশুটারগান ও ৫০ রাউন্ড রাইফেলের গুলি সহ এক বাংকাদেশী আরেক রোহিঙ্গাসহ মোট দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
গেল ২২ মে এসব অস্ত্রের মহড়া নিয়ন্ত্রণ অভিযানে এক রোহিঙ্গাকে আটক করেছে ৮আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (৮এপিবিএন) এসময় ১টি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটার গান ও ১টি শর্টগানের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেন ৮-এপিবিএন সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ জালাল উদ্দীন ভূঁইয়া।
এদিকে ১৫মে কুতুপালং লম্বাশিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে এরকম মহড়ার সময় এপিবিএন পুলিশের সাথে দুষ্কৃতকারীদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারী নিহত হয়। ১৪আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) সৈয়দ হারুন অর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এমন লোমহর্ষক ঘটনা অহরহ ঘটে যাচ্ছে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে। নিত্যানতুন খুন,ঘুম,অপহরণের ঘটনা বেড়েই যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। এ নিয়ে আতংকে দিনযাপন করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।
শুধু তাই নই,রোহিঙ্গারা মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে চোরাইপথে মাদক ও নিষিদ্ধপন্য পাচারের মুলহোতা বলে জানা গেছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে মায়ানমার ও রোহিঙ্গা শিবিরে বিশাল সিন্ডিকেট। এসব মাদক তারা প্রথমে রোহিঙ্গা শিবিরে আনেন তারপর বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের দিয়ে পাচার করান। এমন এক ঘটনার বর্ণনা দেন কুতুপালং ক্যাম্পের বুজুরুছ মিয়া নামক এক রোহিঙ্গা।
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, র্যাব,বিজিবি,পুলিশ প্রশাসনের হাতে প্রতিনিয়ত ইয়াবা ও চোরাইমাল মাল নিয়ে নিয়মিত রোহিঙ্গা পাচারকারীরা আটক হচ্ছে। কিন্তু তারপরও নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না এসব কালোবাজারি। এর পিছনের রহস্য রোহিঙ্গা ইস্যু বলে মন্তব্য করেন সুশীল ব্যাক্তিরা।
একাধিক প্রশাসনিক সুত্র মতে, রোহিঙ্গারা বেপরোয়া হয়ে যাওয়ার ঘটনা সত্য। তাদের নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। যদিও প্রশাসনিকভাবে সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে তাদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে। কিন্তু প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা কাটাতারের বাহিরে চলে যাই, সেখানে লিপ্ত হয় অপরাধ জগতে।